ওরা দু’জন বন্ধু। তবে একটু অন্যরকম। কারণ এরা দু’জন দুই ভিন্ন গোত্রের। একজন মানুষ, অন্যজন গরিলা। তাই বলে একজনের হাসি, কান্না, আনন্দ, ব্যথা বুঝতে অন্যজনের কষ্ট হয় না। গরিলা মানুষের অনুভূতি বুঝতে পারে, কারো কারো হয়তো এটি বিশ্বাস করতে কষ্ট হতে পারে। কিন্তু কঙ্গোর একটি গরিলা এতিমখানার কয়েকটি বিরল ছবি দেখার পর নিশ্চয়ই বিশ্বাস বদলে যাবে।

ছবিতে দেখা যাচ্ছে, মানব বন্ধুটির মন খারাপ দেখে গরিলা বন্ধুটি সহমর্মিতা প্রকাশ করছে।
ওহো, বন্ধু দুজনের পরিচয়ই তো দেওয়া হয়নি এখন পর্যন্ত। তাহলে সংক্ষেপে বলি-
মানুষটির নাম ম্যাথু। তিনি কঙ্গোর একটি গরিলা এতিমখানার কেয়ারটেকার। কোনো কারণে কোনো গরিলা শিশু পরিবার থেকে বিচ্ছন্ন হয়ে পড়লে বা মা মারা গেলে সেটিকে এই এতিমখানায় নিয়ে আসা হয়। কেয়ারটেকার ম্যাথু এদের দেখভাল করেন। এতিমখানাটির নাম সেনকিউইকি মাউন্টেন গরিলা অরফানেজ।

ম্যাথুর গরিলা বন্ধুটির নাম মাতাবিশি। মাতাবিশি অবশ্য ম্যাথুকে বন্ধু বলেই জানে না, তাকে তার পিতার মতোও মনে করে।
এবার চলো মূল ঘটনাটি বলি। এই তো কিছুদিন আগে কোনো এক কারণে ম্যাথুর প্রচণ্ড মন খারাপ ছিল। গরিলাদের খাবার-টাবার দিয়ে এসে সে বনের মধ্যেই একটি পরিত্যক্ত টায়ারের উপর বসে পড়ে। তার চোখেমুখে রাজ্যের বিষণ্নতা। কী নিয়ে যেন বড়ই হতাশ সে।
ভাঁজ করা হাঁটুর উপর দুই হাত রেখে মাথা নিচু করে বসে থাকে ম্যাথু। দৃশ্যটি মাতাবিশির হৃদয় ছুঁয়ে যায়। বন্ধুর কষ্টে তার নিজেরও মন খারাপ হয়ে যায়। দূর থেকে সে ছুটে এসে বন্ধু ম্যাথুর পাশে বসে পড়ে। বন্ধুর প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করতে তার মতোই মাথা নিচু করে বসে থাকে সে। এছাড়া তার আর কী-ই-বা করার আছে বলো? গরিলা তো আর মানুষের ভাষায় কথা বলতে পারে না যে, বন্ধুকে সে কথা বলে সান্তনা দেবে। তাই বন্ধুর মতো একই ভঙ্গীতে বসে তার প্রতি সমবেদনা প্রকাশের চেষ্টা তার।
ঘটনাচক্রে সে সময় কাছেই ছিল প্রকৃতিপ্রেমি এক ফটোগ্রাফার নেলিস ওয়ালমারানস। এমন সুযোগ মিস করেননি তিনি।
