তরমুজ শব্দটি শুনলেই চোখের সামনে একটি গোল অথবা ডিম্বাকৃতি সবুজ ফলের ছবি ভেসে উঠে। শৈশব, কৈশোর থেকে যে আমরা এমন তরমুজ দেখেই অভ্যস্ত। তাই চারকোনা অথবা হৃৎপিন্ড (Heart) আকৃতির তরমুজ দেখলে যে কারোরই কিছুটা চমকে উঠার কথা। তবে চারকোনা তরমুজে আর চমকের কিছু নেই। শিল্পোন্নত দেশ জাপান চতুর্ভুজ তথা চারকোনাসহ নানা আকৃতির তরমুজ চাষকে ডালভাতে পরিণত করেছে। বলা যায়, বর্তমানে দেশটিতে স্বাভাবিক আকৃতির যত তরমুজ চাষ হয়, তারচেয়ে বেশী চাষ হয় চারকোনা আকৃতির তরমুজের।
জানা গেছে, বেশ কিছু কারণে জাপানের চাষীরা চারকোনা তরমুজ চাষে ঝুঁকে পড়েছে। প্রথমত এটি একটু আনকমন বলে সহজেই ক্রেতাদের নজড় কাড়ে। তাতে তরমুজের একটু বাড়তি দাম পাওয়া যায়। অন্যদিকে পরিবহন ও রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত সুবিধাও এ কাজে তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করেছে। গোল ও ডিম্বাকৃতির তরমুজ সহজে গড়িয়ে পড়ে যায়। অনেক সময় ওয়াগন বা অন্যান্য যান থেকে পড়ে গিয়ে ফেটে নষ্ট হয়ে যায়। গোল তরমুজের প্যাকিংও তেমন ভালো হয় না। এছাড়া ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে চাইলে অনেক বেশী জায়গা নেয়। এসব সমস্যার সমাধানে দেশটির কৃষকরা চারকোনা তরমুজ চাষের উপায় খুঁজে নেয়।
জানা গেছে, ফুল থেকে যখন তরমুজের ছোট কুড়ি বের হয়, তখনই সেটিকে কাঁচের চতুর্ভুজ বাক্সে ঢুকিয়ে রাখা হয়। ছোট তরমুজটি ধীরে ধীরে বড় হতে হতে বক্সের পুরোটা ভরে যায়। এভাবে তরমুজটি বক্সের আকার ধারণ করে। কাঁচের বাক্স না থাকলে কাঠের বাক্সের মাধ্যমেও সেটি সম্ভব। তবে বাক্সটি মোটামুটি শক্ত হতে হবে, যাবে তরমুজ বড় হবার সময় যে চাপ পড়ে তাতে সেটি ভেঙ্গে না যায়।
এছাড়া তরমুজের সম্ভাব্য আকারের চেয়ে বাক্সটি সামান্য ছোটো হতে হবে। তা না হলে তরমুজটি বাক্স পর্যন্ত ভরবে না, তাতে বাক্সের আকৃতিও আসবে না। সেটি গোল বা ডিম্বাকৃতিই থেকে যাবে।
চারকোনা তরমুজ দিয়ে ভিন্ন আকৃতির তরমুজ চাষ শুরু হলেও পরবর্তীতে আরও ভিন্নতা এসেছে। জাপানের কৃষকরা দেখেছেন, তরমুজের আকৃতি ভিন্ন হলে সৌখিন ক্রেতাদের নজর পড়ে বেশি, তারা বাড়তি দামে ওই তরমুজ কিনে নিতে দ্বিধা করেন না। তাই তারা হৃৎপিন্ড, পুতুল, কলসসহ নানা আকৃতির তরমুজ চাষ শুরু করেছেন।