এ পৃথিবীতে রহস্যের যেন শেষ নেই। রহস্য যেমন প্রকৃতিতে, তেমনই মানবজীবনেও। আমাদের চার পাশে এমন কিছু প্রতিভাবান শিশু রয়েছে, যাদের মেধা, প্রতিভা আর সাফল্যে বিষ্ময়ে আমাদের চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়। তবে মুশকিল হচ্ছে-বেশিরভাগ প্রতিভাবান শিশুর খোঁজ কিন্তু আমরা জানি না। আবার অনেক প্রতিভা অনুকূল পরিবেশ না পেয়ে যত্নের অভাবে হারিয়ে যায়।
মাঝেমধ্যে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কিছু অসাধারণ প্রতিভার খবর উঠে আসে। এমন কয়েকজন বিষ্ময় শিশুর কথা বলছি তোমাদের। এদের মধ্যে আছে এলিটা আন্দ্রে, ২ বছর বয়সেই যার আঁকা ছবি খ্যাতনামা গ্যালারিতে জায়গা করে নেয়। আর ৩ বছর বয়সে ২ ঘণ্টা মঞ্চে দর্শকদের সামনে গান গেয়ে ক্লিওপেট্রা। মাত্র ৭ বছর বয়সে সার্জান হিসেবে চম দেখায় আকরিত যশওয়াল। দক্ষিণ কোরিয়ার কিম উং মাত্র ৪ বছর বয়সে বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখে, ডক্টরেট ডিগ্রি পায় ১৫ বছর বয়সে। আর মাত্র ১২ বছর বয়সে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয় গ্রেগরি স্মিথ।
এলিয়েটা আন্দ্রঃ
এলিটা আন্দ্রে অস্ট্রেলিয়ার শিশু। মাত্র ২ বছর বয়সে তার আঁকা ছবি জায়গা করে নেয় দেশটির খ্যাতনামা কয়েকটি গ্যালারিতে।
ক্লিওপেট্রাঃ
ক্লিওপেট্রা স্ট্রাটান ইউরোপের দেশ মলদোভার শিশু। তার বাবাও একজন নামকরা সঙ্গীত শিল্পী। ২০০২ সালে জন্ম নেওয়া ক্লিওপেট্রা দুই বছর বয়সে গান গাইতে শুরু করে। মাত্র ৩ বছর বয়সে সে মঞ্চে ২ ঘণ্টার লাইভ অনুষ্ঠান করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয়। মাত্র ৪ বছর বছসে বের হয় তার একক গানের এলবাম। আর তাতে প্রতি গানের জন্য সম্মানি পায় ১০০০ ইউরো, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮০ হাজার টাকা। কিছুদিনের মধ্যেই সে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দামী শিশুশিল্পীতে পরিণত হয়। আর সবচেয়ে কম বয়সের শিল্পী হিসেবে জিতে নেয় এমটিভির মিউজিক অ্যাওয়ার্ড।
আকরিতঃ
আকরিত যশোওয়াল ভারতীয় শিশু। ১৯৯৩ সালে জন্ম নেওয়া আকরিতকে দেশটির সবচেয়ে বুদ্ধিমান ও স্মার্ট শিশু মনে করা হয়। তার বুদ্ধিমাত্রার স্কোর ১৪৬। আর সেটি তার ৭ বছর বয়সের। ওই সময়ই সে হঠাৎ সবার নজরে আসে। ২০০০ সালে আকরিত তার বাড়িতে বসে ৮ বছর বয়সী মেয়ের পোড়া হাত অস্ত্রোপচার করে সাড়া ফেলে দেয়। বিশ্বজুড়ে রটে যায় এটি। এ খবর পেয়ে মার্কিন টিভি তারকা অপরাহ্ন উইনফ্রে আকরিতকে তার অনুষ্ঠানে অতিথি করেন। বিস্ময়কর প্রতিভার এ বালকটি এখন পাঞ্জাবের চণ্ডিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। সেই ভারতীয় এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সবচেয়ে কমবয়সী ছাত্র।
গ্রেগরি স্মিথঃ
১৯৯০ সালে জন্ম নেওয়া গ্রেগরি স্মিথ মাত্র ১০ বছর বয়সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। তবে সেটি তার বড় কৃতিত্ব নয়। কৃতিত্ব হচ্ছে তার সমাজ চিন্তা ও কাজ।
বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালে মাত্র ১১ বছর বয়সে গ্রেগরি ইন্টারন্যাশনাল ইয়ুথ অ্যাডভোকেটস নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে। আর সে সংগঠনের ব্যানারে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য জনমত গঠনের চেষ্টা চালাতে থাকে।
ওই বয়সেই গ্রেগরি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন এবং সোভিয়েত রাশিয়ার নেতা মিখাইল গর্ভাচেভের সাথে সাক্ষাত করতে সমর্থ হয়। এছাড়া বিশ্বশান্তি বিষয়ে জাতিসংঘে বক্তব্য রাখার সুযোগ পায় সে।
শান্তির জন্য এই অদম্য চেষ্টার কারণে তাকে চার চারবার নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়। প্রথমবার যখন গ্রেগরি মনোনীত হয় তখন তার বয়স মাত্র ১২ বছর।